একনজরে ফেইসবুক থেকে আয় করার যত উপায়। কোনটি আপনার জন্য

আমরা সাধারণত সময় কাটানোর জন্য ফেসবুক ব্যবহার করি। তবে আপনি এই মুল্যবান সময় কাজে লাগিয়ে ফেসবুক থেকেও অনলাইনে টাকা আয় করতে পারবেন। বর্তমানে বিভিন্ন ভাবে ফেসবুক থেকে আয় করা যায়। আজ আমি এই পোস্টে সেগুলো নিয়ে আলোচনা করবো।

একনজরে ফেইসবুক থেকে আয় করার যত উপায়। কোনটি আপনার জন্য ফেইসবুক থেকে আয় করার সহজ উপায় ফেইসবুক মার্কেটিং ফেইসবুক মার্কেটিং এর করণীয় অনলাইনে ইনকাম করার উপায় esojani short technique of facebook earning esojani.com
একনজরে ফেইসবুক থেকে আয় করার যত উপায়। কোনটি আপনার জন্য


ফেইসবুক থেকে আয় করার উপায়

১. ভিডিও তৈরী করে আয়
ইউটিউবের মতো ফেসবুকে ভিডিও তৈরি করে আয় করা যায়। ইউটিউবে যেমন ভিডিওতে বিজ্ঞাপন দেখানোর মাধ্যমে আয় করা যায় তেমনি ফেসবুকে পেজে আপনার ভিডিওতে বিজ্ঞাপন দেখনোর মাধ্যমে আপনি আয় করতে পারবেন। এক্ষেত্রে আপনার একটি ফেসবুক পেজ প্রয়োজন। পেজ তৈরী করা হয়ে গেলে ভিডিও আপলোড দিতে হবে। এরপর আপনার পেজে ১০০০০ হাজার ফলোয়ার এবং ভিডিওতে এক মাসে কমপক্ষে ৩০০০০ মিনিট ওয়াচটাইম আসলে আপনি মনিটাইজেশনের জন্য এপ্লাই করতে পারবেন। মনিটাইজেশন পেয়ে গেলে ফেসবুক আপনার ভিডিওতে বিজ্ঞাপন দেখাবে এবং সেই বিজ্ঞাপন থেকে আপনি আয় করতে পারবেন।

২. রিলস থেকে আয়
বর্তমানে ফেসবুক একটি নতুন পরিষেবা চালু করেছে যেখানে টিকটকের মতো ভিডিও আপলোড করা যাবে। প্রফেশনাল মোড অন করলে আপনি স্টোরি আপলোড দেওয়ার মতো রিলস আপলোড দিতে পারবেন। রিলসের ক্ষেত্রে আপনার ভিডিওতে ভিউ এবং জনপ্রিয়তার উপর নির্ভর করে ফেসবুক আপনাকে প্রতি মাসে একটি রিওয়ার্ড দিবে। আপনি সেই রিওয়ার্ড ব্যাংক একাউন্টের মাধ্যমে তুলতে পারবেন।

৩. ইনস্ট্যান্ট আর্টিকেল থেকে আয়
আপনার কি নিউজ ওয়েবসাইট আছে? যদি থাকে তাহলে আপনি ফেসবুকের ইনস্ট্যান্ট আর্টিকেলের সাহায্যে আয় করতে পারবেন। ইনস্ট্যান্ট আর্টিকেল অনেকটা AMP এর মতো। তবে এটি শুধু ফেসবুকের অফিসিয়াল মোবাইল অ্যাপে ব্যবহার করে যায়। এক্ষেত্রে ফেসবুক আপনার ওয়েব পেজকে অপ্টিমাইজ করে নেবে এবং মোবাইলের মাধ্যমে তাড়াতাড়ি লোড হবে। আপনার পোস্টের মাঝে ফেসবুক কিছু বিজ্ঞাপন দেখাবে এবং আপনি সেখান থেকে আয় করতে পারবেন।

৪. ফেসবুক গ্রুপ মনিটাইজেশন করে আয়
২০১৮ সালে ফেসবুক প্রথম গ্রুপ মনিটাইজেশন চালু করে। গ্রুপ মনিটাইজেশন চালু করার প্রধান কারণ হলো গ্রুপের এডমিনকে পারিশ্রমিক দেওয়া। একজন গ্রুপের এডমিন খুব কষ্ট করে একটি গ্রুপ কে দাড় করায়। তাঁদের পারিশ্রমিক দেওয়ার জন্য ফেসবুক এই গ্রুপ মনিটাইজেশন চালু করে। তবে এটি ফেসবুক পেজ মনিটাইজেশন থেকে সম্পূর্ণ আলাদা। ধরুন একটি কোম্পানি তাদের পন্য প্রচারের জন্য ফেসবুকে বিজ্ঞাপন দিলো। সেই বিজ্ঞাপন দাতার টার্গেট ধরুন দশ হাজার অডিয়েন্স। এর জন্য সেই কোম্পানি ফেসবুকে ১০ ডলার ইনভেস্ট করেছে। এখন আপনি যদি আপনার মনিটাইজেশন পাওয়া গ্রুপ থেকে সেই পন্যে দশ হাজার অডিয়েন্স এনে দিতে পারেন তাহলে সেই ১০ ডলারের একাংশ আপনি পেয়ে যাবেন। এভাবেই ফেসবুক গ্রুপ মনিটাইজেশনের মাধ্যমে আয় করা যায়।

৫. স্পন্সর থেকে আয়
আপনি যদি ফেসবুকে অনেক জনপ্রিয় হয়ে হয়ে থাকেন তাহলে স্পন্সর নিয়ে সহজেই আয় করতে পারবেন। এক্ষেত্রে একটি কোম্পানি আপনাকে তাদের পন্য প্রচার করার জন্য কিছু টাকা দেবে এবং আপনাকে তাদের পন্য প্রচার করে দিতে হবে। যারা ফেসবুকে অনেক জনপ্রিয় তারা স্পন্সর নিয়ে অনলাইনে আয় করে। ফেসবুকে সহজেই জনপ্রিয় হওয়া যায়না। এর জন্য ভালো ভালো কনটেন্ট নিয়মিত পোস্ট করতে হবে।

৬. এফিলিয়েট মার্কেটিং করে আয়
পন্যের উপর কমিশন দিয়ে অন্যের দ্বারা পন্য প্রচার করার পদ্ধতিকে এফিলিয়েট মার্কেটিং বলে। ফেসবুকে জনপ্রিয় হলে সহজেই এফিলিয়েট মার্কেটিং করে আয় করা যায় তবে এর জন্য একটি বিশ্বস্ত এবং অধিক কমিশন প্রদানকারী এফিলিয়েট প্রোগ্রাম খুজে বের করতে হবে। আপনি ইন্টারনেটে এমন অনেক প্রোগ্রাম পেয়ে যাবেন।

৭. অ্যাপ মনিটাইজেশন করে আয়
গুগল এডমবের মতো ফেসবুকের অ্যাপ মনিটাইজেশন নেটওয়ার্ক আছে। আপনি যদি একজন অ্যাপ ডেভেলপার হয়ে থাকেন তাহলে ফেসবুকের অ্যাপ মনিটাইজেশন করে আয় করতে পারবেন। বর্তমানে অনেক অ্যাপ ফেসবুকের অ্যাপ মনিটাইজেশনের দ্বারা মনিটাইজড্। তবে এক্ষেত্রে অ্যাপের ব্যবহারকারীর সংখ্যা বেশি থাকতে হবে। অন্যথায় আপনি বেশি টাকা আয় করতে পারবেন না।

৮. রিচার্জের ব্যবসা করে আয়
বর্তমানে ফেসবুকে এটি অনেক জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। সাধারণ সিমকে ড্রয়েড সিমে পরিণত করে রিচার্জের ব্যবসা করা যায়। এক্ষেত্রে কম টাকায় ইন্টারনেট কিনে বেশি টাকায় বিক্রি করে আপনি লাভবান হতে পারবেন। রিচার্জের ব্যবসা আপনি অন্য স্থানেও করতে পারবেন তবে ফেসবুকে এটি জনপ্রিয় এবং সবথেকে বেশি কাস্টমার পাওয়া যায়। বর্তমানে অনেকে ড্রয়েড সিমে কনভার্ট করে দেয় তাছাড়া রিসেলার রিচার্জ করে দেয়। আপনি তাদের থেকে কিনে বেশি দামে বিক্রি করে মুনাফা আয় করতে পারবেন।

৯. ডলার বিক্রি করে আয়
বাংলাদেশে সাধারণত ডুয়াল কারেন্সি কার্ড পাওয়া যায় না। তাই যার কাছে কার্ড আছে তার কাছে শরনাপন্ন হতে হয়। আপনার কাছে যদি ডুয়াল কারেন্সি কার্ড থাকে তাহলে আপন ডলার বিক্রি করে আয় করতে পারবেন। বর্তমানে অনেকে কম দামে ডলার কিনে বেশি দামে বিক্রি করে মুনাফা আয় করছে। তবে বর্তমানে প্রায় সব ব্যাংকে ডুয়াল কারেন্সি কার্ড নিতে গেলে পাসপোর্ট প্রয়োজন হয়। এক্ষেত্রে আপনাকে একটি পাসপোর্ট তৈরী করতে হবে।

১০. এডমিন ডিল করে ফেসবুক থেকে আয়
প্রথমে আমাদের এডমিন ডিল কি জানা দরকার। ধরুন একজন গ্রুপের মেম্বার তার কোনো জিনিস বেচতে চাই। তাই সে আপনার গ্রুপে বিজ্ঞাপন দিলো। একজন সেই পন্য কিনতে আগ্রহী হলো। এখন অনলাইনে ধোকা দেওয়ার সম্ভাবনা থাকে তাই একজন তৃতীয় পক্ষ থাকা দরকার যে কোনো চিন্তা ছাড়াই সেই জিনিসটি বিক্রি করতে সাহায্য করবে। ধোকা থেকে বাচার জন্য মুলত এডমিন ডিল করা হয়। চলুন কিভাবে এডমিন ডিল করতে হয় দেখে নিই।

কিভাবে এডমিন ডিল করবেন?

১. প্রথমে যে পন্য বিক্রি করবে সে গ্রুপে পোস্ট করবে।

২. যে পন্য কিনতে ইচ্ছুক সে পন্যের মালিকের কাছে মেসেজ দিবে এবং ডিল ফিক্সড করে নেবে।

৩. এরপর তারা এডমিন কে মেসেজ দিবে এবং ক্রেতা, এডমিন, ও বিক্রেতা মিলে একটি সাময়িক গ্রুপ খুলবে।

৪. ক্রেতা এডমনিকে আগে থেকে যা ডিল হয়েছিলো সেই পরিমাণ টাকা পাঠিয়ে দেবে।

৫. পন্য ক্রেতাকে বুঝিয়ে দেওয়ার পর এডমিন বিক্রেতাকে কিছু কমিশন রেখে টাকা দিয়ে দেবে।

এভাবে এডমিন ডিল করে ফেসবুক থেকে আপনি টাকা আয় করতে পারবেন।

আজ এ পর্যন্তই। আশাকরি আমাদের আজকের আর্টিকেলটি আপনাদের ভালো লেগেছে। এরকম আরোও আর্টিকেল পেতে আমাদের ওয়েবসাইট প্রতিনিয়ত ভিজিট করুন। 

ধন্যবাদ সবাইকে।

AKMA

A Simple Man. Admin and Author of Esojani.com

আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ। সাথেই থাকবেন, ইন শা আল্লাহ।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন (0)
নবীনতর পূর্বতন