পানিতে ডুবে মৃত্যু
দুর্ঘটনাবসত কেউ যদি পানিতে ডুবে শ্বাস-প্রশ্বাস বন্ধ হয়ে মারা যায় তখন তাকে পানিতে ডুবে মৃত্যু বলে। 'বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার(WHO) তথ্য অনুযায়ী, সারা পৃথিবীতে প্রতি বছর তিন লাখ ৫৯ হাজারের মতো মানুষ পানিতে ডুবে মারা যায়, যারমধ্যে ৯০ শতাংশরই মৃত্যু হয় নিম্ন ও মধ্যম আয়ের দেশগুলোতে। সব দেশেই পানিতে ডুবে মৃত্যুর মধ্যে এক থেকে চার বছরের শিশু মৃত্যুর হার সবচেয়ে বেশি।
বছরে বাংলাদেশে ১২ হাজার শিশুর মৃত্যু হয় পানিতে ডুবে। দিনে গড়ে প্রায় ৩২ জন শিশু পানিতে ডুবে মারা যায়। অধিকাংশ সময় শিশুরা পরিবারের অন্য সদস্যদের অগোচরে বাড়ির চারপাশের পুকুর বা জলাশয়ে চলে যায় এবং দুর্ঘটনার শিকার হয়। দেশে সবচেয়ে বেশি মৃত্যুর ঘটনা ঘটে আগস্ট মাসে।
যেকোন প্রাকৃতিক দুর্যোগের বাইরেও বাংলাদেশে প্রতিবছর শিশু মৃত্যুর বড় কারণ পানিতে ডুবে মারা যাওয়া। তাই শিশুমৃত্যু নিয়ে SDG-এর লক্ষ্য অর্জনে প্রতিরোধযোগ্য এ মৃত্যু হ্রাস জরুরি। পারিবারিক পর্যায়ে সচেতনতা সৃষ্টি ও পারস্পরিক সহযোগিতামূলক কার্যক্রমের মাধ্যমে বহু সংখ্যক শিশুকে পানিতে ডুবে মৃত্যু থেকে রক্ষা করা সম্ভব। আর এটি সম্ভব হলে এসডিজি'র লক্ষ্য অর্জন সহজ হবে। এজন্য সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের পাশাপাশি জাতীয় ও স্থানীয় গণমাধ্যমকেও সক্রিয় ভূমিকা পালন করতে হবে।
এমন মৃত্যুর কারনঃ
কোন নৌ দুর্ঘটনা না হলে মা যখন রান্না, কাপড় ধোয়া, পরিবারের কাজে ব্যস্ত হয়ে পড়েন তখন এ দুর্ঘটনা বেশি ঘটে । সকাল থেকে দুপুর এই সময়ের মধ্যে বাড়ির পাশের পুকুর, খালে ডুবে মারা যাওয়ার ঘটনা ঘটে থাকে। শিশুকে সার্বক্ষণিক চোখে-চোখে রাখলে এ দুর্ঘটনা রোধ করা সম্ভব। দরিদ্রতা, অসচেতনতা ও প্রাতিষ্ঠানিক উদ্যোগের ঘাটতির কারণে পানিতে ডুবে শিশু মৃত্যুর ঘটনা ঘটছে। পানিতে ডুবে শিশুমৃত্যু এত দ্রুত ঘটে যে শিশুটিকে বাচানোর বা কোনো রকম সাহায্য করার সময় ও সুযোগ থাকে না। একমাত্র অসতর্কতার কারণেই এভাবে অসংখ্য শিশুর মৃত্যু ঘটছে।
কেন মারা যায়ঃ
শিশু বা বয়স্ক যেকোন মানুষের দম বন্ধ করে থাকার স্বাভাবিক ক্ষমতা থাকে ৯ থেকে ১০ সেকেন্ড। কিন্তু অনেক সময় পানিতে ডুবে থাকলে নিঃশ্বাস নেওয়া যায় না। যখন দম নিতে চায় তখন ফুস্ফুসে পানি ঢুকে হৃতপিন্ডের কার্যক্রম বন্ধ হলে মানুষটি মারা যায়।
মাথা নিচের দিকে থাকার কারনঃ
মানুষের বডি একটি দ্বিপ্রতিসম। কিডনী, লিভার কিংবা হার্ট এর মতো গুরুত্ত্বপুর্ণ অঙ্গানুগুলো শরীরের উপরের অংশে থাকায় সাধারণত উপরের অংশের ঘনত্ত বেশি হয়। আর যে বস্তুর ঘনত্ত্ব যত বেশি হয়, সে বস্তু তত দ্রুত ডুবে যায়। মানুষের যেকোন পার্টের চেয়ে মাথার ঘনত্ত্ব বেশি। তাই মৃত মানুষের মাথা সর্বদা নিচে থাকে। যেটাকে অনেকেই মনে করে ভুতে মেরে এমন করেছে।
প্রতিকারঃ
দিনের শুরুতে শিশুদের নিবিড় তত্ত্বাবধানে রাখা হলে বাংলাদেশে পানিতে ডুবে শিশু মৃত্যুর হার ৭০% রোধ করা সম্ভব হতে পারে। গ্রামভিত্তিক শিশু দিবাযত্ন কেন্দ্র সফলভাবে পানিতে ডুবে শিশু মৃত্যু রোধে বেশ কার্যকর। আবার গ্রামভিত্তিক প্রতিষ্ঠানগুলো শিশুদের শারীরিক ও মানসিক বিকাশের জন্যও সহায়ক। এ ধরনের দিবাযত্নের ব্যবস্থা বাংলাদেশের মতো অন্যান্য নিম্ন ও মধ্যম আয়ের দেশগুলোতে পাঁচ বছরের কম বয়সী শিশুদের পানিতে ডুবে মৃত্যুর হার দূরীকরণে বিশেষ অবদান রাখতে পারে।
সবচেয়ে বড় কথা হচ্ছে পারিবারিক পর্যায়ে সচেতনতা সৃষ্টি ও সহযোগিতামূলক কার্যক্রম বৃদ্ধি করা। শিশুর বয়স ও সম্ভাব্য ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা চিহ্নিত করে আরো বেশি যত্নশীল হতে হবে।
বিষয় টা জানা ছিলনা। ধন্যবাদ।
উত্তরমুছুনআপ্নাকেও ধন্যবাদ
মুছুনInformatives
উত্তরমুছুনthanks
মুছুনValo laglo
উত্তরমুছুনThanks
মুছুনOsadharon
উত্তরমুছুনThanks
মুছুনThanks
উত্তরমুছুনThanks
মুছুন